রবিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

Love Story

-হ্যালো।
-কে? কে বলছেন?
-তুই আমারে চিনস নাই??? আমার গলার
আওয়াজ তাও ভুইলা গেছস?
আমারে তো ভুলছসই, আওয়াজ তাও
ভুললি কিভাবে রে?
-কে রে তুই? নাম তা বল। সকাল সকাল
মেজাজ টা খারাপ করিস না।
-তুই এখনো বিছানায়?
তাহলে আসবি কিভাবে?
-কোথায় আসবো আবার?
-কোথায় মানে? চট্টগ্রাম। আমাদের
বাসায়। আজকে না তোর আসার কথা...
- ও হো। ভুলেই তো গেছি।
দাঁরা আমি এখনই বের হচ্ছি। তোদের
বাসায় দেখা হবে। বাই।
এই বলেই অভ্র ফোন কেটে দিল। এখন
সে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হল।
আজকে অভ্রর জীবনের অনেক বড়
একটা দিন।
প্রায় ৩০ মিনিট পর, চট্টগ্রামে যাওয়ার
জন্য একটা বাস পেল। কিছুটা পিছনের
দিকেই ছিল সিটটা। জানালার
সাইডে হওয়াতে ভালোই হয়েছে।
বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে অভ্র। সব
কিছুই পিছনের দিকে চলে যাচ্ছে।
এগুলাই
দেখতে দেখতে অভ্র চলে গেল তার
অতীতে। মনে পরে গেল মিথিলার
সাথে তার সম্পর্কের সূত্রপাত।
মনে পরে গেল ৬ বছর আগের সেই চরম
মুহূর্তের কথা। আজও বড় হাসি পায় সেই
কথা মনে পরলে। কতই না বোকা ছিল ও।
............ ক্যাম্পাসে বসে আছে সবাই।
যার
যার ফ্রেন্ড সার্কেল নিয়ে ব্যাস্ত
সবাই।
অন্যদের নিয়ে তাদের চুল মাত্র
ভাবনা নেই। সেই ভিড়ের মধ্যে এক দল
সিল অভ্র দের। যার কেন্দ্র বিন্দুই সিল
অভ্র। সব কিছুতেই সেরা ছিল।
ভার্সিটির
সবাই ওকে এক নামেই চিনত। সেইদিন
সবাই অভ্রকে গান গাওয়ার জন্য ধরেছে।

অনেক লাজুক প্রকিতির হওয়া সত্তেও
বন্ধুদের জন্য সব করত। এখন তো নাও
করতে পারছে না। তাই তার সঙ্গী তার
অনেক পছন্দের গিটার
টা হাতে নিয়ে ধরল তাহসানের
প্রত্যাবর্তন গানটি।
কিন্তু অর্ধেক শেষ হতে না হতেই ও
আঁতকে উঠল।চোখ পড়ল একটা মেয়ের
দিকে। মুখ থেকে শুধু একটা কথাই বের হল,
"অপ্সরী।"
অভ্রর এই
অবস্থা দেখে মেয়েটা মুচকি হেসে হাওয়ার
বেগে চলে গেল। অভ্র মেয়েটার
হাসি দেখেই তার প্রেমে পরে গেছে।
অনেক খুজার চেষ্টা করল, কিন্তু
মেয়েটাকে আর খুজে পেলো না।
এদিকে দেখতে দেখতে ১
টা সেমিস্টার
চলে গেল। অভ্রও পড়ার
প্রতি মনযোগী হয়ী উঠল। কিন্তু
মেয়েটাকে ভুলতে পারল না। চোখ বন্ধ
করলেই সেই অপরুপ হাসি টা ওর চোখের
সামনে ভেসে উঠে।
হঠাৎ এক রাতে ২ টার দিকে অভ্রর ফোন
কল আসলো এক unknown নাম্বার থেকে।
প্রথমে অভ্র কল টাকে ignore করল। কিন্তু
বার বার আসার কারণে আর ignore
করতে পারল না। কল টা ধরেই
কিছুটা হুংকার দিয়েই বলল,"কে? এত
রাতে কি?"
ঐ পাশ থেকে একটা মেয়ে অনেক
মিষ্টি করেই বলল, (অবশ্য ওর
গলাটা অনেক মিষ্টি ছিল) "জী,
আপনি আমাকে চিনবেন না। কিন্তু
আমি আপনাকে অনেক ভালো করেই
চিনি। আমি আপনাকে একটা দরকারেইই
কল করেছি। আসলে আমার ঘুম পাচ্ছিল
না।
তাই আপনাকে কল দিয়েছি, গান শুনার
জন্য। আমি জানি আপনি অনেক
ভালো গান পারেন। plz plz না করবেন
না।"
মেয়েটার কথা শুনে অভ্র রীতিমত
হতবম্ভ।
কি বলে সে? কিন্তু এত সুন্দর
গলা শুনে সে আর পারল না ignore করার
জন্য।
মনের অজান্তেই বলে ফেলল," তোমার
নাম কি?"
-"মিথিলা"
বাহ! কত সুন্দর নাম! যত মিষ্টি গলা তত
মিষ্টি নাম।
আর পারল না অভ্র, একটা চেয়ার আর
গিটার টা নিয়ে চলে গেল বারান্দায়
আর
শুরু করল তার গান।
প্রায় রাতেই অভ্রর কাছে গান শুনত
মিথিলা। মিথিলা অনেক
ভালো কবিতা আবৃতি করতে পারত।
অভ্রও
মাঝেমাঝে বায়না ধরত কবিতা শুনার
জন্য। ওরা একি ডিপার্টমেন্টের
হওয়াতে অভ্র মিথিলাকে পরাতেও help
করত। ওরা এত close হয়ে পড়ল যে এক
মিনিটও
ওরা একে অন্যকে ছাড়া থাকতে পারত
না। অভ্র সেই মেয়েতা প্রায় ভুলেই
গেছিল। দেখতে দেখতে অভ্র
মিথিলার
প্রেমে পরে গেল, কিন্তু বলতে ভয়
পেলো,
যদি মিথিলা ওকে ভুল বুঝে। তাই
ফ্রেন্ড
হয়েই মিথিলার পাশে থাকত অভ্র।
দেখতে দেখতে ওদের পড়াশুনা শেষ
হয়ে গেল। মিথিলা বায়না ধরল,
ওরা দেখা করবে। এর
আগে ওরা একে অপরকে দেখে নাই,
এটা ভেবেই অভ্র রাজি হল আর
জায়গা ঠিক করল।
মিথিলা একটা নীল
শাড়ী পরে আসলো,
ওকে অনেক সুন্দর লাগছিল, একদম
ডানা কাঁটা পরীর মত। কিন্তু
মিথিলাকে দেখে অভ্র পুরাই টাস্কিত।
এই সেই মেয়ে যাকে সে এতদিন
ধরে খুঁজছে। অভ্র আর কিছু ভাবল না।
বলেই
ফেলল,"I LOVE U"সাথে সাথে একটা ঠাস
করে একটা শব্দ হল। অভ্র কিছু বলার আগেই
মিথিলা বলে উঠল," এইটা বলতে এতদিন
লাগে? তুই খাতাশ তো খাতাশই রইলি।"
এই বলে মিথিলা হাসতে লাগল। অভ্র এই
হাসির মানে বুজতে পারছে।
সে মিথিলাকে সব বলল যে মিথিলাই
সেই মেয়ে যাকে প্রথম দেখাতেই
ভালবেসে ফেলেছিল। মিথিলা সব
শুনে হাসতে থাকল, আর অভ্র সেই হাসির
দিকে অপলকে চেয়ে রইল।
এখন অভ্র সেই ভালবাসার কাছেই
যাচ্ছে।
সে নিজেকে এখন অনেক
সুখী মনে করে।
পৃথিবীর সুখী মানুষদের
মধ্যে নিজেকে খুজে পায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন