আর দশটা মেয়ের মত এই গল্পের মেয়েটিও অনেক স্বপ্ন দেখতো ।ছোট একটা সংসার ,অফুরন্তু কিছু ভালবাসা আর ঘর আলো করে একটা সন্তানের ।
,
মেয়েটি বুকের বাম কোনে আলতো আদরে ঘুম পাড়িয়ে রাখতো স্বপ্ন গুলো ।যদি কখনো স্বপ্ন গুলো হামাগুড়ি দিয়ে উঠতো ঠিক তখন মেয়েটি বলতোঃ
"আরো সময় অনেক বাকি ,সময় হলে না হয় উঠিস !!
কথা টা বলে মিষ্টি একটা হাসি দিত মেয়টা ।
,
কিন্তু মেয়েটির স্বপ্ন গুলো কি আদৌ পূরন হয়ে ছিল ??
,
মেয়েটির নাম রুনু ।গরীর ঘরে জন্ম নিয়েছিল ।ছিমছাম একটা গ্রামে বাস করতো ।
,
রুনুর মা নেই ।ছোট বেলায় মা মারা যায় ।পরিবারে শুধু রুনু আর বৃদ্ধ বাবা জামাল মিয়া ।
,
জামাল মিয়া তেমন কোন কাজ করতে পারতো না ।টুকটাক কাজ করেই কোন রকম দিন গুলো অতিবাহিত হতো তাদের বাপ বেটির সংসার ।।
,
রুনু তখন নবম শ্রেণীর ছাত্রী ।পড়াশুনার মাথা টা খারাপ ছিল না ,তবে বেশি দুর যেতে পারেনি ।অর্থের জন্য থেমে যায় তার পড়াশুনা ।
,
নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া যে কোন ছাত্র/ছাত্রী কে কম করে হলেও অন্তত ১টা প্রায়ভেট তাকে পড়তেই হয় ।কিন্তু রুনুর ??
,
না ,রুনু কোন প্রায়ভেট পড়তে পারে নি ।দু বেলা যাদের খাবার ঠিক মত পায় না তাদের আবার .........!!
,
বৃদ্ধ জামাল মিয়ার কাছে ছোট একটা অজুহাত জুড়ে দিয়ে রুনু বলেছিলঃ
"বাবা ,আমি তো এখন নিজের নাম লিখতেই পারি ।শুধু শুধু টাকা খরচ করে পড়ে লাভ কি !
,
বৃদ্ধ জামাল মিয়া কথাটার অর্থ বুঝেও না বোঝার ভান করে মাথাটা দুলিয়ে সন্মতি দেয় ।কিছু কি করার ছিল জমাল মিয়ার !
,
কোন মানুষ বিপদে পড়লে তাকে রক্ষা করার জন্য কিছু মানুষ পাঠিয়ে দেয় ।কিন্তু তারা কি সত্যি তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করে !নাকি আরো বিপদে ফেলে দেন !
,
আনোয়ারা বেগম একদিন রুনুদের বাড়ি এসে পান চিবাতে চিবাতে বলেছিলঃ
" জামাল মিয়া ,তোমার মেয়ে ডারে আমার লগে শহরে পাঠিয়ে দাও ।গার্মেন্টে কাজ করে মোটা অংকের টাকা পাঠাবে ।সংসার তোমার ভালোই চলবে ।
,
জামাল মিয়া মাথা টা নত করে শুনতে থাকে আনোয়ারা বেগমের কথা গুলো ।কোন কিছু ভেবে পাচ্ছেন না ,কি বলবে !!
,
মুখের ভেতর জমিয়ে রাখা পানের নালা ফেলে দিয়ে আবার ও বলে উঠেনঃ
"কি হলো জামাল মিয়া ,কিছু বল্লানা যে !!
,
জামাল মিয়া এবার মাথা টা তুলে রুনুর দিকে তাকিয়ে বলেছিলঃ
" কি কসরে মা !তুই কি পারবি !!
,
রুনু অশ্রু সজল চোখে মুখে হাসি ফুলিয়ে বলেছিলঃ
" হ বাজান ,পারুম ।অনেক পারুম ।।
,
,
অনেক স্বপ্ন চোখে নিয়ে পরের দিন সাকালে আনোয়ারা বেগমের সাথে বাড়ি থেকে বের আসে রুনু ।
,
চলন্ত বাসের খোলা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে ।দেখতে থাকে তার শষ্য শ্যামলে ঘেরা সবুজ মাঠকে ।যেন হারিয়ে যাচ্ছে সারা জীবনের জন্য ।
,
শহরে পৌছাতে কিছুটা রাত হয়ে যায় তাদের ।ছোট একটা রুমে গিয়ে উঠে তারা ।রাতে ঘুমিয়ে পড়ে রুনু ।।
,
সকালের সোনালী সূর্য্যের আলো টা রুনুর জন্য আর আলো হয়ে আসেনি ।মেঘের কালো ছাঁয়া দিয়ে ঢেকে দিয়ে ছিল সুন্দর জীবনের সুখের আলোটা কে ।
,
ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে অন্য এক শহরের বাসিন্দা বলে আবিস্কার করলো রুনু ।ছোট ছোট সব রুম গুলো ।তার মানে ??
,
হুম ঠিকি ধরেছেন ।মেয়েটি এখন পতিতা লয়ের একজন বাসিন্দা ।ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রুনুকে পতিতা লয়ের কোন একজনের কাছে মোটা টাকা পেয়ে বিক্রি করে দেয় ডাইনী আনোয়ারা বেগম ।
,
মেয়েটি আর কখনো বের হতে পারেনি সেই জেলখানা থেকে ।ছোট রুমের জানালা দিয়ে ছোট ছোট কাগজে কিছু একটা লিখে ছুড়ে দেয় রাস্তার বুকেঃ
" আমি এখানে বন্দি কেউ আমাকে উদ্ধার করো ।
,
নাহ ,কেউ আসেনি উদ্ধার করার জন্য ।পথের মাঝে পড়ে থাকা কাগজের টুকরো কেউ কখনো কুড়িয়ে নেয় না ।বরং পায়ে মাড়িয়ে চলে যায় ।
,
তবে আর যারা এসেছিল ,তারা শুধু মেয়েটি কে ভোগ করার জন্য এসেছিল ।সাধ মিটিয়ে চলে গেছে ।উদ্ভার করতে আসেনি ।
,
মেয়েটির স্বপ্ন গুলো এখন ঘুম পাড়ানোর ঔষুধ খাইয়ে চিরদিনের জন্য ঘুম পারিয়ে রাখে ।যে স্বপ্ন গুলো ছিল তার কাছে অনেক কিছু ।
,
,
,
পুনশ্চঃ এভাবেই হারিয়ে যায় রুনুর মত কিছু মেয়েদের আগলে রাখা সুখের স্বপ্ন গুলো ।গরীবের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নষ্ট করে দেয় ,ধবংস হয়ে যায় ছোট একটা পরিবার ।
,
সমাজের অন্য সব মানুষের কাছে রুনুর মত পরিবার হয় কলংকিত ।পায় শুধু অবহেলা ,অপমান আর মুখভর্তি গালমন্দ ।
,
পরিবারের বেঁচে থাকা মানুষ গুলো এখন মৃত মানুষের মত বেঁচে থাকতে হয় ।দোষ টা রুনুর নাকি আনোয়ারা বেগমদের মত মহিলাদের !!
,
প্রশ্নটা থাকবে আপনার বিবেকের কাছে ।সময় থাকলে উত্তর টা দেবার চেষ্টা করবেন ।।
,
,
,Collected..............
লিখাঃ কবি( ছন্দহীন কবি )
,
মেয়েটি বুকের বাম কোনে আলতো আদরে ঘুম পাড়িয়ে রাখতো স্বপ্ন গুলো ।যদি কখনো স্বপ্ন গুলো হামাগুড়ি দিয়ে উঠতো ঠিক তখন মেয়েটি বলতোঃ
"আরো সময় অনেক বাকি ,সময় হলে না হয় উঠিস !!
কথা টা বলে মিষ্টি একটা হাসি দিত মেয়টা ।
,
কিন্তু মেয়েটির স্বপ্ন গুলো কি আদৌ পূরন হয়ে ছিল ??
,
মেয়েটির নাম রুনু ।গরীর ঘরে জন্ম নিয়েছিল ।ছিমছাম একটা গ্রামে বাস করতো ।
,
রুনুর মা নেই ।ছোট বেলায় মা মারা যায় ।পরিবারে শুধু রুনু আর বৃদ্ধ বাবা জামাল মিয়া ।
,
জামাল মিয়া তেমন কোন কাজ করতে পারতো না ।টুকটাক কাজ করেই কোন রকম দিন গুলো অতিবাহিত হতো তাদের বাপ বেটির সংসার ।।
,
রুনু তখন নবম শ্রেণীর ছাত্রী ।পড়াশুনার মাথা টা খারাপ ছিল না ,তবে বেশি দুর যেতে পারেনি ।অর্থের জন্য থেমে যায় তার পড়াশুনা ।
,
নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া যে কোন ছাত্র/ছাত্রী কে কম করে হলেও অন্তত ১টা প্রায়ভেট তাকে পড়তেই হয় ।কিন্তু রুনুর ??
,
না ,রুনু কোন প্রায়ভেট পড়তে পারে নি ।দু বেলা যাদের খাবার ঠিক মত পায় না তাদের আবার .........!!
,
বৃদ্ধ জামাল মিয়ার কাছে ছোট একটা অজুহাত জুড়ে দিয়ে রুনু বলেছিলঃ
"বাবা ,আমি তো এখন নিজের নাম লিখতেই পারি ।শুধু শুধু টাকা খরচ করে পড়ে লাভ কি !
,
বৃদ্ধ জামাল মিয়া কথাটার অর্থ বুঝেও না বোঝার ভান করে মাথাটা দুলিয়ে সন্মতি দেয় ।কিছু কি করার ছিল জমাল মিয়ার !
,
কোন মানুষ বিপদে পড়লে তাকে রক্ষা করার জন্য কিছু মানুষ পাঠিয়ে দেয় ।কিন্তু তারা কি সত্যি তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করে !নাকি আরো বিপদে ফেলে দেন !
,
আনোয়ারা বেগম একদিন রুনুদের বাড়ি এসে পান চিবাতে চিবাতে বলেছিলঃ
" জামাল মিয়া ,তোমার মেয়ে ডারে আমার লগে শহরে পাঠিয়ে দাও ।গার্মেন্টে কাজ করে মোটা অংকের টাকা পাঠাবে ।সংসার তোমার ভালোই চলবে ।
,
জামাল মিয়া মাথা টা নত করে শুনতে থাকে আনোয়ারা বেগমের কথা গুলো ।কোন কিছু ভেবে পাচ্ছেন না ,কি বলবে !!
,
মুখের ভেতর জমিয়ে রাখা পানের নালা ফেলে দিয়ে আবার ও বলে উঠেনঃ
"কি হলো জামাল মিয়া ,কিছু বল্লানা যে !!
,
জামাল মিয়া এবার মাথা টা তুলে রুনুর দিকে তাকিয়ে বলেছিলঃ
" কি কসরে মা !তুই কি পারবি !!
,
রুনু অশ্রু সজল চোখে মুখে হাসি ফুলিয়ে বলেছিলঃ
" হ বাজান ,পারুম ।অনেক পারুম ।।
,
,
অনেক স্বপ্ন চোখে নিয়ে পরের দিন সাকালে আনোয়ারা বেগমের সাথে বাড়ি থেকে বের আসে রুনু ।
,
চলন্ত বাসের খোলা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে ।দেখতে থাকে তার শষ্য শ্যামলে ঘেরা সবুজ মাঠকে ।যেন হারিয়ে যাচ্ছে সারা জীবনের জন্য ।
,
শহরে পৌছাতে কিছুটা রাত হয়ে যায় তাদের ।ছোট একটা রুমে গিয়ে উঠে তারা ।রাতে ঘুমিয়ে পড়ে রুনু ।।
,
সকালের সোনালী সূর্য্যের আলো টা রুনুর জন্য আর আলো হয়ে আসেনি ।মেঘের কালো ছাঁয়া দিয়ে ঢেকে দিয়ে ছিল সুন্দর জীবনের সুখের আলোটা কে ।
,
ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে অন্য এক শহরের বাসিন্দা বলে আবিস্কার করলো রুনু ।ছোট ছোট সব রুম গুলো ।তার মানে ??
,
হুম ঠিকি ধরেছেন ।মেয়েটি এখন পতিতা লয়ের একজন বাসিন্দা ।ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রুনুকে পতিতা লয়ের কোন একজনের কাছে মোটা টাকা পেয়ে বিক্রি করে দেয় ডাইনী আনোয়ারা বেগম ।
,
মেয়েটি আর কখনো বের হতে পারেনি সেই জেলখানা থেকে ।ছোট রুমের জানালা দিয়ে ছোট ছোট কাগজে কিছু একটা লিখে ছুড়ে দেয় রাস্তার বুকেঃ
" আমি এখানে বন্দি কেউ আমাকে উদ্ধার করো ।
,
নাহ ,কেউ আসেনি উদ্ধার করার জন্য ।পথের মাঝে পড়ে থাকা কাগজের টুকরো কেউ কখনো কুড়িয়ে নেয় না ।বরং পায়ে মাড়িয়ে চলে যায় ।
,
তবে আর যারা এসেছিল ,তারা শুধু মেয়েটি কে ভোগ করার জন্য এসেছিল ।সাধ মিটিয়ে চলে গেছে ।উদ্ভার করতে আসেনি ।
,
মেয়েটির স্বপ্ন গুলো এখন ঘুম পাড়ানোর ঔষুধ খাইয়ে চিরদিনের জন্য ঘুম পারিয়ে রাখে ।যে স্বপ্ন গুলো ছিল তার কাছে অনেক কিছু ।
,
,
,
পুনশ্চঃ এভাবেই হারিয়ে যায় রুনুর মত কিছু মেয়েদের আগলে রাখা সুখের স্বপ্ন গুলো ।গরীবের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নষ্ট করে দেয় ,ধবংস হয়ে যায় ছোট একটা পরিবার ।
,
সমাজের অন্য সব মানুষের কাছে রুনুর মত পরিবার হয় কলংকিত ।পায় শুধু অবহেলা ,অপমান আর মুখভর্তি গালমন্দ ।
,
পরিবারের বেঁচে থাকা মানুষ গুলো এখন মৃত মানুষের মত বেঁচে থাকতে হয় ।দোষ টা রুনুর নাকি আনোয়ারা বেগমদের মত মহিলাদের !!
,
প্রশ্নটা থাকবে আপনার বিবেকের কাছে ।সময় থাকলে উত্তর টা দেবার চেষ্টা করবেন ।।
,
,
,Collected..............
লিখাঃ কবি( ছন্দহীন কবি )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন