শুক্রবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

না বলা আর্তনাদ

না বলা আর্তনাদ

___শেষ সন্ধ্যার কবি
-স্যার, দুই দিন ধইরা কিচ্ছু খাই নাই।
পেটটা ব্যথায় চু চু করতাছে। ২ টেয়া দেইন,
কিছু খামু
-ওই, সরবি? তোরে কইলাম
না যে টাকা দিতে পারমু না। যা সর। এই
কথা বলে কিছু গালি দেওয়া হল
রায়হানকে।
সাথে তো একটা ধাক্কা ফ্রিই আছে।
ধাক্কাটা খেয়ে রায়হান
সোজা পড়ে গেল, পিচ ঢালা রাস্তায়।
পায়ের কিছুটা অংশ ছিলে গেছে।
হাতটা কেটে গেছে, রক্ত পরছে অঝোরে।
কিন্তু কেউ তার দিকে খেয়াল করার
মতো নেই। ব্যস্ত শহরে সবাই ব্যস্ত।
ধাক্কা খাওয়া ছেলেটি রায়হান। এক
অনাথ ছেলে। বাবা-মার কোনো খবর
জানে না। ডাস্টবিনে থেকেই এতোটা বড়
হয়েছে। আজ ২ দিন
ধরে না খেয়ে রায়হান। তাকে কাজ
দেওয়ার মত কেউ নেই, পড়ালেখা করার মত
অবস্থাও তার নেই। ভিক্ষা চাইলেও কেউ
দেয় না।

আমাদের দেশে এইরকম হাজারো রায়হান
আছে। যাদের থাকার মত জায়গা, খাওয়ার
মত খাবার, পড়ার মত বই এবং পোশাক কিছুই
নেই। শুধু আছে চোখের মধ্যে করুণ আর্তনাদ।
বেচে থাকার জন্য, বড় হওয়ার জন্য।
আমরা আজেবাজে কত কাজে কত টাকাই
না খরচ করি। তবুও তাদের মত শিশুদের
১০-২০ টাকা দেওয়াও আমাদের
কাছে বোঝা মনে হয়। তাদের চোখের
আর্তনাদ আমরা দেখতে পারি না।
দেখলেও বুঝতে চাই না। তাদের করুণ
অবস্থাও আমাদের চোখের সামনে কিছুই
না। ধিক্কার এমন মানসিকতার উপর।
ধিক্কার এমন সমাজের উপর। যারা এই
শিশুদের না বলা কথা বুঝে না।
অনেকে বুঝেও কিছু করতে পারে না। ওই
দিন এক বড় ভাইয়ার সাথে কথা....
আমি:ভাইয়া, একটা কাজ করতে চাই। গরিব
শিশুদের জন্য একটা ফান্ড করি। আপনাদের
সাহায্য লাগবে।
ভাইয়া: শুনো, এইসব
কাজে না গিয়ে পড়াশুনা কর। ভালো হবে।
এসবের জন্য সরকার আছে।
আচ্ছা স্বাধীনতার এতোদিন পড়েও
দেশের এই অবস্থা। সরকার করছে তা কি?
এক দল যায়, আরেক দল আসে। উচ্চপদস্থ
লোকেরা বলছে, দেশে খাদ্য অভাব নেই।
দেশ উন্নতি করছে। আসলেই যদি তাই হয়,
তাহলে রায়হানের মত শিশুরা আজও
ক্ষুধার্ত থাকে কেমনে?
আসুন আমরা সবাই নিজের
মানসিকতাকে একটু বদলাই। দেশটা অনেক
উন্নতি করবে আর রায়হানদেরও
কোনো না বলা আর্তনাদ থাকবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন