শেষ প্রতীক্ষা
প্রতিদিন কিছু না কিছু কারণে বা অকারণে একই পথ দিয়ে
বারবার হেঁটে চলা।রাস্তার পাশ দিয়ে লম্বা মাপের গাছগুলোও
প্রতিদিন একইভাবে দুলে।গাছগুলোকে দেখে মনে হয় না তারা
খুব একটা খারাপ আছে।আরামেই পার করছে প্রতিক্ষণ।
আজ হঠাৎ সূর্যটা খুব তীক্ষ্ণ মেজাজে উঠেছে।গ্রীষ্মকাল বোধ হয়
প্রকৃতিতে হানা দিতে দোয়ারে পৌঁছেছে।প্রতিদিনের মত
আজও তন্ময় মেঠোপথ ধরে পিঁপড়া,বাঁশঝাড়,কাশবন এইসবের সাথে
মনোবাক করতে করতেই এগুচ্ছে।ও আপনাদের তো বলাই হয়নি
তন্ময় একটি মেয়েকে খুবই পছন্দ করে।তবে নাম,ঠিকানা সব
অজ্ঞাত।কিন্তু প্রতিদিন মেয়েটাকে এক পলক দেখবে বলে কি
রোদ,কি বৃষ্টি সব রকম প্রতিকূল আবহাওয়াকে আপন করে রাস্তার
মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে।সাথে কয়েকজন বন্ধুর উপস্থিতিও দেখা
যায়।যার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকা সেজন আসলে তন্ময়
পালাবে না দাঁড়িয়ে থাকবে কঠিন দ্বিধায় পরে যায়।
পালানোর অপচেষ্টা করতেই এক ডজন বা এক হালি বন্ধুরা
দারোয়ানি কাজে ব্যস্ত হত।এর আগে তন্ময় ১০ ১০ বার
পালিয়েছে।এইবার আর নিস্তার নাই।তন্ময় এককথায় বাধ্য হয়ে
সাহসী ভাব নিয়ে মেয়েটির রাস্তার দিকে পা বাড়াল।অর্ধেক
রাস্তা না যেতেই তন্ময় পুনঃরায় পিছুহটল।কিন্তু বন্ধুদের
লাত্তি গুতা খাইয়া মাইয়াটার সামনে গিয়ে বন্ধুদের দিকে
তর্জনী আঙ্গুল দেখিয়ে বলেছিল ঐখানে যে ছেলেগুলো দাঁড়িয়ে
আছে এগুলা আপনাকে প্রতিদিন ডিস্টার্ভ করে তাই না
এগুলাকে আমি শায়েস্তা করতেছি।আপনি যান।আর বন্ধুরা
তন্ময়কে দৌঁড়াইয়া দৌঁড়াইয়া বলে যার জন্য চুরি করি সে বলে
কিনা চোর।
একটা সময় তন্ময় একটা একটা করে মেয়েটির সম্পর্কে সব
বায়োডাটা সংগ্রহ করে তাকে প্রপোজাল দিল।৫ মাসে মনে
হয় সাহস একটুখানি হয়েছে।মেয়েটির নাম ছিল ইমা।কিন্তু
ইমার ফিরতি জবাব আসল এখন তার প্রেম করার কোনো রকম ইচ্ছে
তার নেই। তন্ময় এবার চিন্তা করল এইসব মেয়েটেয়ে বাদ।
পৃথিবীতে কি একটাই মেয়ে নাকি ওর সাথে প্রেম করতে হবে।
১ মাস না যেতেই আবার সেই পুরনো কীর্তি।একটা কোচিং
সেন্টারে ইমা কোচিং করত।সেখানে তন্ময়ের বিশ্বস্ত বন্ধু
আবিরও পড়ত।আবিরই হল তখনকার প্রেম রোগ সারানোর একমাত্র
ঔষধ।ইমাও কিন্তু অজান্তেই তন্ময়ের প্রেমে পড়েছিল।কিন্তু
আবিরের কুক্রিয়া ইমার চোখে পড়তে লাগল।বেচারা বন্ধুর
প্রেমের জন্য কি না করেছিল কিন্তু বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে
এতবড় অপকার করে বসবে কেবা জানত।ঐদিকে কয়েকদিনের
ভিতর তন্ময় কতই না কুকর্ম সম্পাদন করেছিল তা শুধু কর্মগুলোই
জানে।যার ফলস্বরূপ ভোগ করেছিল অভাগা ইমা।একপর্যায়ে
পরিবারের কানে ঘটনা উন্মোচন হতেই ইমার যা হাল হয়েছিল
তা বলার রাখেনা।ঐদিকে তন্ময় পেয়েছিল ইমার ভিলেন
ভাইয়ের ধমক,কিছু নতুন টেনশন,আর কত গুলা সিগারেটের উচ্ছিষ্ট।
আজ বৈশাখী মেলা।তন্ময় প্রতিবারের মত এবারও যথারীথি
উপস্থিত।উপস্থিত প্রতিবারের মত একই হলেও মন মানসিকতা
কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে।এই মন এইবার ছুটে এসেছে একবার
ইমাকে দেখিবে বলে।পরিকল্পনা মাফিক দেখা হল কথাও হল।
ইমার মুখে শুধু একই ধ্বনি আপনি আমার অনেক ক্ষতি করেছেন আর
ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না।আর তন্ময়ের মুখে আরেক ধ্বনি
আমার কথাটা একবার শোন।বাড়ি ফিরতেই এইবার তন্ময়ের
ফাইনাল ডিসিশন যদি ও আমাকে সত্যিই ভালবাসে তাহলে
ফিরে আসবেই।
তন্ময়ের অপেক্ষার প্রহর গিয়ে পৌঁছল পাঁচ বছরের মাথায়।এর
ভিতর ইমার বিয়েও হয়ে গেল শিহাব নামের এক শিল্পপতীর
সাথে।তন্ময় এখনও জানেনা যে তার প্রিয়তমা এখন আরেক
এলাকার বাসিন্দা।শুধু এইটাই জানে একদিন সে আসবে।
স্বামীর ঘরে আছে ঠিক কিন্তু স্বামীর প্রেমঘরে ইমা নিজেকে
মানিয়ে নিতে পারেনি।উঠতে,বসতে,হাঁটতে শুধু তন্ময়ের কথা
মুখে যেন আঠার মত লেগে আছে।আজ অফিস বন্ধ।তাই অাজ
শিহাব সাহেব বাসায় আছে।শিহাব সাহেব বুক র্যাকের পাশ
দিয়ে হেঁটে যেতেই চোখ পড়ল র্যাকের নিচে একটা পুরনো
ডায়রির দিকে।ডায়রিটা নিয়ে শিহাব চলে গেল বেলকনির
পাশে।ডায়রির পাতা প্রায়ই ফুরিয়ে এসেছে আর কয়েকটা
পাতামাত্র।শিহাব সাহেব ধীরে ধীরে ডায়রির পাতায় চোখ
বুলাতে লাগল। যতই ডায়রির পাতাগুলো উল্টাচ্ছে শিহাব
সাহেবের চোখ ততই ঘোলা হয়ে আসছে।বেলকনির ফুলের টপে
পানি দিতে গিয়ে হঠাৎ করেই ইমা তার ডায়রির লাল ফিতাটা
দেখল।ইমা দৌঁড়ে আসতেই তার স্বামীকেই দেখল ডায়রি
হাতে।ইমা ডায়রিটা স্বামীর কাছ থেকে চাইতেই শিহাব
সাহেব শুধু বলেছিল মানুষটা কে।আমার সাথে একটু দেখা করাই
দিবা।শিহাব সাহেব উপলব্ধি করতে পেরেছেন তাদের মাঝে
খুঁটি হয়ে থাকলে নিজেকে সারাজীবন নিজের মনোকারাগারে
অপরাধী সেঁজেই থাকতে হবে।
কোনো এক গ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেলে ইমা আর শিহাব সাহেব
ছুটে এলেন লতায়ঘেরা,ঘাসের চাদরে মোড়া তন্ময়ের গ্রামে।
তন্ময়ের সাথে দেখা করতে চাইলে জনৈক এক ব্যক্তি কাঁন্না
সুরে বলল সে আর আমাদের সাথে থাকেনা সে এখন উপরে থাকে
উপরে।
লেখক: শেষ সন্ধ্যার কবি ,
প্রতিদিন কিছু না কিছু কারণে বা অকারণে একই পথ দিয়ে
বারবার হেঁটে চলা।রাস্তার পাশ দিয়ে লম্বা মাপের গাছগুলোও
প্রতিদিন একইভাবে দুলে।গাছগুলোকে দেখে মনে হয় না তারা
খুব একটা খারাপ আছে।আরামেই পার করছে প্রতিক্ষণ।
আজ হঠাৎ সূর্যটা খুব তীক্ষ্ণ মেজাজে উঠেছে।গ্রীষ্মকাল বোধ হয়
প্রকৃতিতে হানা দিতে দোয়ারে পৌঁছেছে।প্রতিদিনের মত
আজও তন্ময় মেঠোপথ ধরে পিঁপড়া,বাঁশঝাড়,কাশবন এইসবের সাথে
মনোবাক করতে করতেই এগুচ্ছে।ও আপনাদের তো বলাই হয়নি
তন্ময় একটি মেয়েকে খুবই পছন্দ করে।তবে নাম,ঠিকানা সব
অজ্ঞাত।কিন্তু প্রতিদিন মেয়েটাকে এক পলক দেখবে বলে কি
রোদ,কি বৃষ্টি সব রকম প্রতিকূল আবহাওয়াকে আপন করে রাস্তার
মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে।সাথে কয়েকজন বন্ধুর উপস্থিতিও দেখা
যায়।যার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকা সেজন আসলে তন্ময়
পালাবে না দাঁড়িয়ে থাকবে কঠিন দ্বিধায় পরে যায়।
পালানোর অপচেষ্টা করতেই এক ডজন বা এক হালি বন্ধুরা
দারোয়ানি কাজে ব্যস্ত হত।এর আগে তন্ময় ১০ ১০ বার
পালিয়েছে।এইবার আর নিস্তার নাই।তন্ময় এককথায় বাধ্য হয়ে
সাহসী ভাব নিয়ে মেয়েটির রাস্তার দিকে পা বাড়াল।অর্ধেক
রাস্তা না যেতেই তন্ময় পুনঃরায় পিছুহটল।কিন্তু বন্ধুদের
লাত্তি গুতা খাইয়া মাইয়াটার সামনে গিয়ে বন্ধুদের দিকে
তর্জনী আঙ্গুল দেখিয়ে বলেছিল ঐখানে যে ছেলেগুলো দাঁড়িয়ে
আছে এগুলা আপনাকে প্রতিদিন ডিস্টার্ভ করে তাই না
এগুলাকে আমি শায়েস্তা করতেছি।আপনি যান।আর বন্ধুরা
তন্ময়কে দৌঁড়াইয়া দৌঁড়াইয়া বলে যার জন্য চুরি করি সে বলে
কিনা চোর।
একটা সময় তন্ময় একটা একটা করে মেয়েটির সম্পর্কে সব
বায়োডাটা সংগ্রহ করে তাকে প্রপোজাল দিল।৫ মাসে মনে
হয় সাহস একটুখানি হয়েছে।মেয়েটির নাম ছিল ইমা।কিন্তু
ইমার ফিরতি জবাব আসল এখন তার প্রেম করার কোনো রকম ইচ্ছে
তার নেই। তন্ময় এবার চিন্তা করল এইসব মেয়েটেয়ে বাদ।
পৃথিবীতে কি একটাই মেয়ে নাকি ওর সাথে প্রেম করতে হবে।
১ মাস না যেতেই আবার সেই পুরনো কীর্তি।একটা কোচিং
সেন্টারে ইমা কোচিং করত।সেখানে তন্ময়ের বিশ্বস্ত বন্ধু
আবিরও পড়ত।আবিরই হল তখনকার প্রেম রোগ সারানোর একমাত্র
ঔষধ।ইমাও কিন্তু অজান্তেই তন্ময়ের প্রেমে পড়েছিল।কিন্তু
আবিরের কুক্রিয়া ইমার চোখে পড়তে লাগল।বেচারা বন্ধুর
প্রেমের জন্য কি না করেছিল কিন্তু বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে
এতবড় অপকার করে বসবে কেবা জানত।ঐদিকে কয়েকদিনের
ভিতর তন্ময় কতই না কুকর্ম সম্পাদন করেছিল তা শুধু কর্মগুলোই
জানে।যার ফলস্বরূপ ভোগ করেছিল অভাগা ইমা।একপর্যায়ে
পরিবারের কানে ঘটনা উন্মোচন হতেই ইমার যা হাল হয়েছিল
তা বলার রাখেনা।ঐদিকে তন্ময় পেয়েছিল ইমার ভিলেন
ভাইয়ের ধমক,কিছু নতুন টেনশন,আর কত গুলা সিগারেটের উচ্ছিষ্ট।
আজ বৈশাখী মেলা।তন্ময় প্রতিবারের মত এবারও যথারীথি
উপস্থিত।উপস্থিত প্রতিবারের মত একই হলেও মন মানসিকতা
কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে।এই মন এইবার ছুটে এসেছে একবার
ইমাকে দেখিবে বলে।পরিকল্পনা মাফিক দেখা হল কথাও হল।
ইমার মুখে শুধু একই ধ্বনি আপনি আমার অনেক ক্ষতি করেছেন আর
ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না।আর তন্ময়ের মুখে আরেক ধ্বনি
আমার কথাটা একবার শোন।বাড়ি ফিরতেই এইবার তন্ময়ের
ফাইনাল ডিসিশন যদি ও আমাকে সত্যিই ভালবাসে তাহলে
ফিরে আসবেই।
তন্ময়ের অপেক্ষার প্রহর গিয়ে পৌঁছল পাঁচ বছরের মাথায়।এর
ভিতর ইমার বিয়েও হয়ে গেল শিহাব নামের এক শিল্পপতীর
সাথে।তন্ময় এখনও জানেনা যে তার প্রিয়তমা এখন আরেক
এলাকার বাসিন্দা।শুধু এইটাই জানে একদিন সে আসবে।
স্বামীর ঘরে আছে ঠিক কিন্তু স্বামীর প্রেমঘরে ইমা নিজেকে
মানিয়ে নিতে পারেনি।উঠতে,বসতে,হাঁটতে শুধু তন্ময়ের কথা
মুখে যেন আঠার মত লেগে আছে।আজ অফিস বন্ধ।তাই অাজ
শিহাব সাহেব বাসায় আছে।শিহাব সাহেব বুক র্যাকের পাশ
দিয়ে হেঁটে যেতেই চোখ পড়ল র্যাকের নিচে একটা পুরনো
ডায়রির দিকে।ডায়রিটা নিয়ে শিহাব চলে গেল বেলকনির
পাশে।ডায়রির পাতা প্রায়ই ফুরিয়ে এসেছে আর কয়েকটা
পাতামাত্র।শিহাব সাহেব ধীরে ধীরে ডায়রির পাতায় চোখ
বুলাতে লাগল। যতই ডায়রির পাতাগুলো উল্টাচ্ছে শিহাব
সাহেবের চোখ ততই ঘোলা হয়ে আসছে।বেলকনির ফুলের টপে
পানি দিতে গিয়ে হঠাৎ করেই ইমা তার ডায়রির লাল ফিতাটা
দেখল।ইমা দৌঁড়ে আসতেই তার স্বামীকেই দেখল ডায়রি
হাতে।ইমা ডায়রিটা স্বামীর কাছ থেকে চাইতেই শিহাব
সাহেব শুধু বলেছিল মানুষটা কে।আমার সাথে একটু দেখা করাই
দিবা।শিহাব সাহেব উপলব্ধি করতে পেরেছেন তাদের মাঝে
খুঁটি হয়ে থাকলে নিজেকে সারাজীবন নিজের মনোকারাগারে
অপরাধী সেঁজেই থাকতে হবে।
কোনো এক গ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেলে ইমা আর শিহাব সাহেব
ছুটে এলেন লতায়ঘেরা,ঘাসের চাদরে মোড়া তন্ময়ের গ্রামে।
তন্ময়ের সাথে দেখা করতে চাইলে জনৈক এক ব্যক্তি কাঁন্না
সুরে বলল সে আর আমাদের সাথে থাকেনা সে এখন উপরে থাকে
উপরে।
লেখক: শেষ সন্ধ্যার কবি ,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন