বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০১৫

LOve


-- হ্যালো, নীলয় ভাইয়া!
--
হুম বলো প্রিয়ন্তি
--
আপনি কি এখন বাসায়?
--
হ্যাঁ আমি বাসায়
--
আপনি বাসায় কি করেন?
--
তোমাকে কাল যেই পরীক্ষাটা
নিবো ওইটার প্রশ্ন তৈরি করছি
--
বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে দেখেছেন?
--
বৃষ্টি হচ্ছে নাকি সত্যি সত্যি?
--
ভাইয়া আপনি এমন কেন?
--
আমি আবার কেমন?!
--
আপনি একটা রোবট!
--
ওহ! ভালো
ফোনটা কেটে দিলো প্রিয়ন্তি
কলেজ থেকে ফেরার পথেই প্রিয়ন্তি
বুঝতে পেরেছিলো আজ প্রচন্ড বৃষ্টি
হবেই হলোও তাই বাসায় ঢুকতে ঢুকতেই
মুষলধারার বৃষ্টি বৃষ্টি নামলে
প্রিয়ন্তির বান্ধবী রিদিমার বয়ফ্রেন্ড
রিদিমাকে গান শোনায়
প্রিয়ন্তির বয়ফ্রেন্ড নেই বয়ফ্রেন্ড
নামক বস্তুটা তার একেবারেই সহ্য হয়
না তার কাছে মনে হয় ঘোরাফেরা,
ফোনে দিনরাত পকর পকর করার জন্য
একটা ছেলে দরকার তাই মেয়েরা
বয়ফ্রেন্ড বানাই অনেকটা বাজার
থেকে কিনে আনা টেডিবিয়ার টার
মতো
প্রিয়ন্তিকে গার্লফ্রেন্ড বানাতে
অনেক ছেলেই লাইন দিয়ে আছে এই
ব্যাপারটাও খুবই বিরক্তিকর লাগে
প্রিয়ন্তির! সব ছেলেই এমন ভাব যে
সবাই কোন না কোন কোম্পানির
সেলসম্যান এই অফার সেই অফার, আরো
কতোকিছু প্রিয়ন্তি এইসব পাত্তা দেয়
নি কখনো
তবে বৃষ্টি নামলে কি করতে হয় সে
জানে বৃষ্টি নামলে বৃষ্টিতে ভিজতে
হয় প্রিয়ন্তির আম্মু তাকে কখনোই
সেইটা করতে দেয় নি যদিও কোচিং
যাওয়া আসার সময় যদিও বৃষ্টি নামে
তবুও সে ভিজতে পারে না সর্বোচ্চ
গাড়ির কাঁচটা নামিয়ে হাত দিয়ে
বৃষ্টির কণাগুলোকে উপভোগ করতে
পারে এই কারণে বৃষ্টি নামলে তার
মনটা উসখুশ করতে থাকে যেমনটা এখন
ঘরের মাঝে বসে থাকতে থাকতে
হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে একটা মানুষই
আছে যে তার এই অশান্ত মনকে শান'
করতে পারে
--
ভাইয়া আবার ফোন দিলাম
--
হুম বলো
--
ভাইয়া আপনি বৃষ্টিতে ভিজেন না?
--
না
--
কেন?
--
আমাকে কি পাগলে কামড়িয়েছে?
--
আচ্ছা ভাইয়া বৃষ্টির সময় কি আপনার
কারোর কথা মনে পড়ে?
--
না
--
মীম আপুর কথাও না?
--
না
--
আপনি এমন কেন?
--
কেমন?
--
আপনি একটা যাচ্ছেতাই!
--
না প্রিয়ন্তি আমি খুবই তুচ্ছ সাধারণ
একজন মানুষ
--
সাধারণ মানুষ? আচ্ছা ভাইয়া
সাধারণ মানুষ বৃষ্টির সময় কি করে?
--
তা তোহ জানি না কিন্তু আমি এখন
বৃষ্টি না হলে বাইরে বের হতাম
বাসায় খাবার কিছুই নেই তাই কিছু
কিনতে বাইরে যাওয়ার খুব দরকার ছিল
এখন বৃষ্টির জন্য বাইরে যেতে পারছি
না
--
ভাইয়া আপনি বারান্দায় দাড়িয়ে
দাড়িয়ে হা করে বৃষ্টি খান তাহলে
আপনার ক্ষিদে মিটে যাবে
আপনাকে তখন আর বাইরে যেতে হবে
না
--
আচ্ছা
--
করবেন তোহ?
--
দেখি
--
আচ্ছা ভাইয়া আপনি কি জানেন
আমাদের পেটের মতো আমাদের
মনেরও ক্ষিদে লাগে?
--
না
--
জানেন না কেন? আপনাকে জানতে
হবে! আপনি না আমার টিচার!
--
আমি কিভাবে জানবো? আমি তোহ
আর মন নিয়ে পড়াশোনা করি না বা
তোমাকে পড়ায় না আমি
মেডিকেল সাইন্সের স্টুডেন্ট মন বলে
কোন কিছুই আমার পড়ার মধ্যে নাই
--
আচ্ছা
প্রিয়ন্তি জানে নীলয় ভাইয়া এখন মন
আর মনের ক্ষিদে ব্যাপারটা নিয়ে
ভাববে তারপর কোন সমাধান যখন বের
করতে পারবে না তখন ফোন দিয়ে
বলবে মনের ক্ষিদে বলে কিছু নাই, সবই
মানসিক সমস্যা নীলয় ভাইয়ার কাছে
মনের সকল বিষয়ই মানসিক সমস্যা
নীলয় ভাইয়াকে একদিন সে প্রশ্ন
করেছিলো যে তার মন খারাপ হয়
নাকি জবাবে নীলয় ভাইয়া
বলেছিলো যে সুস্থ মানুষ আর সুস্থ
মানুষের নাকি কখনো মন খারাপ হয় না
আচ্ছা ভাইয়া তোহ সুস্থ মানুষ না সে
ভুল জানে নিজের সম্বন্ধে সে তার মন
খারাপের কারণ জানেন না বা তার
যে মন খারাপ সেইটাই সে জানে না
অসুস্থ মানুষেরাই মন খারাপের কারণ
জানে না কিন্তু সুস্থ মানুষরা জানে
এই যে এখন প্রিয়ন্তির মন খারাপ
লাগছে কারণ ভাইয়া খেতে পারছে
না তার ভয়ংকর খারাপ লাগছে
নীলয় ড্রয়ারটা খুলে সিগারেটের
প্যাকেট টা হাতে নিলো একটাই
সিগারেট আছে সে সিগারেট খায়
না তবুও এই সিগারেট টা তার কাছে
থাকেই এইটা যে একজনের স্মৃতি
নীলয়ের মনে পড়ে যাচ্ছে তিন বছর
আগের সেই বৃষ্টির দিনের কথা
জীবনে প্রথম এবং শেষবারের মতো
বৃষ্টিতে ভিজেছিলো সে মীমের
সাথেই নীলয়ের ঠোঁটের কোণায় এক
চিলতে হাসি ফুটে ওঠে আর কিছু সে
মনে করতে চায় না মীমকে নিয়ে আর
কিছু মনে করার প্রয়োজন নেই শুধু এই
একটি বৃষ্টির দিনের স্মৃতিটায় তার
কাছে অমূল্য
"
আচ্ছা প্রিয়ন্তি মেয়েটা কি আমার
কোন আচরণে মুগ্ধ হয়েছে আমি যেমনটা
হয়েছিলাম মীমের হাসি দেখে?
হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না এই
বয়সে সবাই মুগ্ধ হয়, যা দেখে তাতেই
মুগ্ধ হয়ে যায় প্রিয়ন্তির এই মুগ্ধ হওয়ার
ব্যাপার টা জলদি ঠিক করতে হবে "
নীলয় মনে মনে ভাবে কথাগুলো
নীলয় তোহ আকাশের মতো নীলয়ের
মনে অনেক মেঘ জমেছে কিন্তু সেই
মেঘ তার চোখ দিয়ে অশ্রুধারা হয়ে
বর্ষিত হওয়ার কোন সুযোগ কখনো
পায়নি নীলয় এতোটাও দূর্বল না
তোমার শিরায় হাঁটে নিকোটিন
ধারা,
কোথায় ঘুমাবো আমি, বিছানা
সাহারা!
 
লেখাঃ কাঁটাবিহীন ক্যাকটাস

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন