শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫

ভালবাসার শেষ
-কুয়াশাস্নাত আকাশ
ফোনের রিংটোনে ঘুম ভাঙে অর্ণবের।
--হ্যালো....রাত্রি।
--হ্যালো, এই অর্ণব সকাল ৮টা বাজে আর তুমি এখনো ঘুমাচ্ছ !!
--না বাবু।আমি ঘুমিয়ে থাকলে তোমার সাথে এখন কথা বলছে কে?
--হইছে হইছে আর বলতে হবে না।কি করছ তা বোঝা হয়ে গেছে আমার।এই শোন এখনি উঠে ফ্রেশ হবা তুমি।আর ৯টার ভিতরে সেন্ট্রাল পার্কে আসবে।১মিনিট লেট হইলে খবর আছে তোমার।
--জোঁ হুকুম মহারাণী।
তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে গেল অর্ণব। কারণ জানে একটু লেট হইলে রাত্রি আজ সারাদিন হয়ত কান ধরিয়েই দাড়ান করে রাখবে তাকে।আস্ত একটা পাগলি মেয়েটা। তবু পাগলীটার পাগলামিকেই খুব ভালবাসে অর্ণব। অন্তত নিজের থেকে বেশি ভালবাসে সে রাত্রিকে।
.
.
সকাল ৯টা,এইমাত্র পার্কে এসে পৌছাল অর্ণব। দূর থেকেই দেখতে পেল কোণার বেঞ্চটাতে মলিন মুখে বসে আছে রাত্রি।রাত্রির দিকে এগিয়ে গেল অর্ণব।
--এই পাগলী এমন পেঁচার মতো মূখ করে বসে আছ কেন?
--অর্ণব তোমায় কিছু বলার আছে আমার।
--হুম।বলো।
--অর্ণব আমি তোমায় ভালবাসি না।কখনো বাসিও নি।গত সাতমাস যা কিছু হইছে সব ভুলে যাও। এ সবই শুধু অভিনয় ছিল।
--এসব কি বলছ তুমি? রাত্রি,এমন ফান করা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
--ফান না অর্ণব। যা বলছি সবই সত্যি।আমি রাজকে ভালবাসি অর্ণব। তোমাকে না।
--কিন্তু রাত্রি আমি যে শুধু তোমায় ভালবাসি।তোমায় ছাড়া বাঁচব না অামি।
--হাহ্ ভালবাসো? ? কি যোগ্যতা আছে তোমার আমাকে ভালবাসার?তোমার স্ট্যাটাস আর আমার স্ট্যাটাস কখনোই মেলে না অর্ণব। তোমার সাথে বড়জোর টাইমপাস করা যায়।কিন্তু ভালবাসা!!!ইম্পসিবল।
রাত্রি চলে যায় সব সম্পর্কের শেষ করে।অর্ণব বুঝতে পারে না কি করবে। যাকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিল আজ সেই চলে যাচ্ছে তাকে ছেড়ে।স্বাভাবিক জীবনে আর ফেরা হয় না অর্ণবের। হারিয়ে যায় নেশার মাঝে।
....
....
১বছর পর,
ইদানীং রাজ রাত্রিকে এড়িয়ে চলছে। রাত্রির খুব খারাপ লাগে রাজ তাকে এমন এড়িয়ে চললে।কিন্তু যেভাবেই হোক আজ রাজের সাথে কথা বলতেই হবে রাত্রিকে।
--হ্যালো রাজ।
--জান আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি।পরে কথা বলব তোমার সাথে।
--রাজ একটু শোন প্লিজ।
--ওকে কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো।
--রাজ,আমি পেগন্যান্ট।
--কি???
--হ্যা রাজ।চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি। তাছাড়া আমি কাউকে মূখ দেখাতে পারব না।
--কি বল।মাথা ঠিক আছে তোমার? আমার পক্ষে এখন তোমায় বিয়ে করা কোন ভাবেই সম্ভব না।
--প্লিজ রাজ এভাবে বলো না।তাহলে আমার বেঁচে থাকার কোন পথ থাকবে না।
--রাত্রি তুমি বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেল।
আর কোন কথা বলে না রাত্রি। শুধু ফোনের লাইনটা কেটে দেয়।
....
কিছুদিন পর ইউনিভার্সিটি বিল্ডিং এর সামনে রাত্রির লাশ পাওয়া যায়। ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করে রাত্রি।
আর অপরদিকে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আজ শেষ নিঃশ্বাসের অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই অর্ণবের। কারণ অর্ণব যে আজ ক্যান্সারের শিকার.........

-
-
===  শেষ সন্ধ্যার কবি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন