-- ★ পরন্ত বিকেলে এসেছিলে তুমি ★--
-------------------------- ★-------------------------
রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া'টা চুকিয়ে ব্রীজের একটি পাশে যেয়ে দাড়ায় ''অভ্র'' ! কিছুক্ষণ পরেই অবন্তী আসবে , ঘড়ি'তে সময় বিকেল ''তিনটে বেজে পনেরো মিনিট'' নাহ্ আজ সময়টাও যেন আজ ছেলেটির উপর জেদ ধরে বসে আছে , বড্ড বেশিই জেদ ! মনে হচ্ছে যেন অন্যদিনের তুলনায় আজ ঘড়ির কাটা টা টিকটিক করে আওয়াজ তুলে ঘুরছে না ! ওটা স্বাভাবিকের চেয়েও মৃদু গতিতে ঘুরছে । কিছুই বুঝতে পারছেনা ''অভ্র'' ! শহরের এত রেস্টুরেন্ট আর পার্ক থাকতে পাগলী মেয়েটা , এখানেই বা কেন ডাকলো? তবে এই জায়গাটা ও খুব একটা খারাপ না বেশ ভালোই , ব্রীজের পাশেই ছোট্ট একটি লেক ,কাঠের একটি ছোট্ট টুল পাতানো , আশেপাশে তেমন কেউ নেই , জায়গাটা বেশ ফাকা ''অবন্তী'' এখন পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি । ''অবন্তী'' এলেই ''অভ্র'' অবন্তী'কে নিয়ে লেকের পাশে যেয়ে ছোট্ট টুলটায় বসবে । ''অবন্তী'' আসা অবধি এখানটাই স্হির দাড়িয়ে ''অভ্র'' রাস্তার ধুলোবালি , আর গাড়ির দূষিত কালো ধোঁয়া সহ্য করে যাচ্ছে । কারো জন্যে অপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকাটা অসহ্য একটা ব্যাপার । তবে ''অভ্র'' মেয়েটির সংস্পর্শে এসে ইদানীং অনেটাই বদলে গেছে । অবন্তীর জন্যে অসহনিয়কে সহনিয় করে নিয়েছে । কারন মেয়ে বলে কথা , চাইলেই বাসা থেকে যখন তখন হুট করে ছেলেদের মত বেরোনো যায়না! অবন্তীর জন্য প্রতিবারেই অপেক্ষা করতে হয় , এ আর নতুন কি? ''অভ্র'' ভাবছে পাশের চায়ের দোকান যেয়ে ওখান থেকে একটি সিগারেট কিনে ওটাতে আগুন ধরিয়ে ফুকবে । নাহ্ তা আর এই জনমে হয়ে উঠবে বলে মনে হয়না ! কারণ ছেলেটি মেয়েটির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । মেয়েটির দেয়া কথা তাকে রাখতে হবে ! মেয়েটি বলেছিলো ''জীবনের যতটা দিন আমায় ভালবাসবে, কথা দাও ততদিন তুমি ভুল করেও নিকোটিনের ধোঁয়া মুখে নিবেনা । আর যদি নাও , তবে বুঝে নিবো , আমার জন্যে তোমার ভালবাসা ফুরিয়ে গেছে ! ''সেদিন ই ছেলেটি পণ করে জীবনে কোনোদিনও সে সিগারেট মুখে নিবেনা ।
.
তবে মাঝে মধ্যে মাথার মগজে রহস্যেরা পায়চারি করে বেড়ায় ! নিকোটিনে আসলে কি আছে ? যাকে পেতে প্রতিদিন আসক্ত হচ্ছে , হাজার ও বালক, বালিকা ! স্ব ইচ্ছেয় ঠেলে দিচ্ছে নিজেকে মৃত্যুর দরজায় ।
.
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন শক্ত করে শার্টের কলার চেপে ধরলো! পেছন ফিরতেই অবন্তী ফিক করে হেসে দিলো।
--এইযে স্যার এখানে দাড়িয়ে কিসের হিসেব কষা হচ্ছে শুনি...?
--নাহ্ তেমন কিছু না । তোমার জন্যই তো অপেক্ষা করছিলাম । ''মেয়েটি আজ প্রথম শাড়ি পড়েছে''! কালো রঙের শাড়ি ''মেয়েটিকে আজ প্রথম শাড়ি পড়তে দেখে অবাক হয় ''অভ্র'' অবাক হয়ে প্রশ্ন করে । ''সূর্য আজ কোন দিকে উদয় হলো?
--কেনো বলো তো?
--হঠাৎ শাড়ি পড়েছো তো তাই জিজ্ঞেস করলাম!
--আমি কি শাড়ি পড়তে পারিনা? আমি কি ছেলে মানুষ নাকি? যে লোকে দেখলে হাসবে আজিব তো! হুহ ...
--অমন করে রেগে যাও কেন? আমার উপর ? আমার খুব ভালো লেগেছে ! আজ প্রথম তোমাকে শাড়ি পড়তে দেখে, আরেকটা কথা , তোমাকে ঠিক বউ বউ লাগছে...... কথাটা বলেই ফেলফেল করে হেসে দেয় ''অভ্র'' !
--ইশ শখ কতো! তোমাকে বিয়ে করতে যাবো কোন দুঃখে !
--আমাকে ভালবাসো সেই দুঃখে ।
--আমি তোমাকে ভালবাসি নাআআআআ....
--সত্যি তো?
--হুম ।
--তাহলে আজ হঠাৎ আমাকে এখানে ডেকে পাঠিয়ে শাড়ি পড়ে এসেছ কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই?
--হুম কোনো উদ্দেশ্য নেই ..! উদ্দেশ্যহীন ।
--ও ! চললাম ভাল থেকো...
--চললাম মানে কোথায় যাও ? ( শার্টের কলার ঝাঁপটে ধরে )
--হাতটা সরাও ! আমি যাবো,আমার কেউ নেই তাই আজ সিগারেটকেই সঙ্গী করে নিবো ! ওটাকে মুখে নিয়ে দেখতে চাই ওটার স্বাদ কেমন ! ''মেয়েটির কাছ থেকে তার লুকোনো কথা বের করানোর জন্যে এই একটি মিথ্যে কথাই যথেষ্ট ! চট করে মেয়েটি অভ্র'র শার্টের কলার ঝাঁপটে ধরে বলে ...
-- কি বললে তুমি? তাহলে আমাকে দেয়া তোমার প্রতিজ্ঞার কি হবে?
--ওটা তোমার প্রেমিকের জন্যে তুলে রাখো ।
-- তাহলে তুমি আমার কে?
--সেটা তুমিই ভালো জানো!
''অবন্তী আর কথা না বাড়িয়ে অভ্র'র শার্টের কলার ছেড়ে দেয় । চোখ দুটো জলে ভরা টলমল করছে ! অবন্তীর অশ্রু সিক্ত নয়নের জল কাজল ধুয়ে গাল বেয়ে বেয়ে পড়ছে ... ওটা মুছে দেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই অভ্র'র । ছেলেটা শুধু মেয়েটির কাঁন্না দেখে যাচ্ছে আর মিটি মিটি হাসছে । মেয়েটি তার জেদ মেটাতে তার বোয়াল মাছের চোয়ালের মত হাতের নখ দিয়ে ছেলেটির বাম হাতে ইচ্ছে মতো কয়েকবার আচড় কাটে, খানিকটা রক্ত ও বেরুচ্ছিলো, তবুও অভ্র ওটাকে থামতে দিলোনা , সে হেসে যাচ্ছে অবিরত । দু'মিনিট পর অবন্তী অভ্র'র খুব নিকটে এসে কানে কানে ফিসফিস করে বলে ''আমাকে ভালবাসো? জবাবে অভ্র বলে বুকের বাম পাশটায় হৃদ যন্ত্রটায় ধক ধক করে শব্দ হচ্ছে শুনতে পাচ্ছেন মেডাম? ''কই না তো!'' অবন্তী মাথাটা আলতো করে অভ্র'র বুকে রাখে .. হৃদ যন্ত্রটায় ধক ধক করে শব্দ হচ্ছে । অবন্তী অবাক হয়ে প্রশ্ন করে ''ওটা কার জন্যে অমন করছে শুনি? ''অভ্র'' উত্তর দেয় কেউ না চললাম! মেয়েটি রেগে বলে ''এখানে চুপচাপ বসো কোত্থাও যাবেনা তুমি! আমি এবার রেগে গেলে কিন্তু খামচে তোমার হাত মুখ লাল করে ফেলবো! ছেলেটি ফিক করে হেসে দেয় । সাথে মেয়েটিও ছেলেটির বুকে মাথা গুজে দেয় , অভ্র চুপটি করে ছোট্ট বেঞ্চিটায় বসে রইলো! ভয়ে নয় পাগলী মেয়ের পাগলুমোর কাছে হার মেনেছে সে, অমন খুনসুটি ভালবাসা কজনের ভাগ্যেই বা জোটে? ॥
.
.
→ ✒ written by →শেষ সন্ধ্যার কবি
-------------------------- ★-------------------------
রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া'টা চুকিয়ে ব্রীজের একটি পাশে যেয়ে দাড়ায় ''অভ্র'' ! কিছুক্ষণ পরেই অবন্তী আসবে , ঘড়ি'তে সময় বিকেল ''তিনটে বেজে পনেরো মিনিট'' নাহ্ আজ সময়টাও যেন আজ ছেলেটির উপর জেদ ধরে বসে আছে , বড্ড বেশিই জেদ ! মনে হচ্ছে যেন অন্যদিনের তুলনায় আজ ঘড়ির কাটা টা টিকটিক করে আওয়াজ তুলে ঘুরছে না ! ওটা স্বাভাবিকের চেয়েও মৃদু গতিতে ঘুরছে । কিছুই বুঝতে পারছেনা ''অভ্র'' ! শহরের এত রেস্টুরেন্ট আর পার্ক থাকতে পাগলী মেয়েটা , এখানেই বা কেন ডাকলো? তবে এই জায়গাটা ও খুব একটা খারাপ না বেশ ভালোই , ব্রীজের পাশেই ছোট্ট একটি লেক ,কাঠের একটি ছোট্ট টুল পাতানো , আশেপাশে তেমন কেউ নেই , জায়গাটা বেশ ফাকা ''অবন্তী'' এখন পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি । ''অবন্তী'' এলেই ''অভ্র'' অবন্তী'কে নিয়ে লেকের পাশে যেয়ে ছোট্ট টুলটায় বসবে । ''অবন্তী'' আসা অবধি এখানটাই স্হির দাড়িয়ে ''অভ্র'' রাস্তার ধুলোবালি , আর গাড়ির দূষিত কালো ধোঁয়া সহ্য করে যাচ্ছে । কারো জন্যে অপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকাটা অসহ্য একটা ব্যাপার । তবে ''অভ্র'' মেয়েটির সংস্পর্শে এসে ইদানীং অনেটাই বদলে গেছে । অবন্তীর জন্যে অসহনিয়কে সহনিয় করে নিয়েছে । কারন মেয়ে বলে কথা , চাইলেই বাসা থেকে যখন তখন হুট করে ছেলেদের মত বেরোনো যায়না! অবন্তীর জন্য প্রতিবারেই অপেক্ষা করতে হয় , এ আর নতুন কি? ''অভ্র'' ভাবছে পাশের চায়ের দোকান যেয়ে ওখান থেকে একটি সিগারেট কিনে ওটাতে আগুন ধরিয়ে ফুকবে । নাহ্ তা আর এই জনমে হয়ে উঠবে বলে মনে হয়না ! কারণ ছেলেটি মেয়েটির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । মেয়েটির দেয়া কথা তাকে রাখতে হবে ! মেয়েটি বলেছিলো ''জীবনের যতটা দিন আমায় ভালবাসবে, কথা দাও ততদিন তুমি ভুল করেও নিকোটিনের ধোঁয়া মুখে নিবেনা । আর যদি নাও , তবে বুঝে নিবো , আমার জন্যে তোমার ভালবাসা ফুরিয়ে গেছে ! ''সেদিন ই ছেলেটি পণ করে জীবনে কোনোদিনও সে সিগারেট মুখে নিবেনা ।
.
তবে মাঝে মধ্যে মাথার মগজে রহস্যেরা পায়চারি করে বেড়ায় ! নিকোটিনে আসলে কি আছে ? যাকে পেতে প্রতিদিন আসক্ত হচ্ছে , হাজার ও বালক, বালিকা ! স্ব ইচ্ছেয় ঠেলে দিচ্ছে নিজেকে মৃত্যুর দরজায় ।
.
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন শক্ত করে শার্টের কলার চেপে ধরলো! পেছন ফিরতেই অবন্তী ফিক করে হেসে দিলো।
--এইযে স্যার এখানে দাড়িয়ে কিসের হিসেব কষা হচ্ছে শুনি...?
--নাহ্ তেমন কিছু না । তোমার জন্যই তো অপেক্ষা করছিলাম । ''মেয়েটি আজ প্রথম শাড়ি পড়েছে''! কালো রঙের শাড়ি ''মেয়েটিকে আজ প্রথম শাড়ি পড়তে দেখে অবাক হয় ''অভ্র'' অবাক হয়ে প্রশ্ন করে । ''সূর্য আজ কোন দিকে উদয় হলো?
--কেনো বলো তো?
--হঠাৎ শাড়ি পড়েছো তো তাই জিজ্ঞেস করলাম!
--আমি কি শাড়ি পড়তে পারিনা? আমি কি ছেলে মানুষ নাকি? যে লোকে দেখলে হাসবে আজিব তো! হুহ ...
--অমন করে রেগে যাও কেন? আমার উপর ? আমার খুব ভালো লেগেছে ! আজ প্রথম তোমাকে শাড়ি পড়তে দেখে, আরেকটা কথা , তোমাকে ঠিক বউ বউ লাগছে...... কথাটা বলেই ফেলফেল করে হেসে দেয় ''অভ্র'' !
--ইশ শখ কতো! তোমাকে বিয়ে করতে যাবো কোন দুঃখে !
--আমাকে ভালবাসো সেই দুঃখে ।
--আমি তোমাকে ভালবাসি নাআআআআ....
--সত্যি তো?
--হুম ।
--তাহলে আজ হঠাৎ আমাকে এখানে ডেকে পাঠিয়ে শাড়ি পড়ে এসেছ কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই?
--হুম কোনো উদ্দেশ্য নেই ..! উদ্দেশ্যহীন ।
--ও ! চললাম ভাল থেকো...
--চললাম মানে কোথায় যাও ? ( শার্টের কলার ঝাঁপটে ধরে )
--হাতটা সরাও ! আমি যাবো,আমার কেউ নেই তাই আজ সিগারেটকেই সঙ্গী করে নিবো ! ওটাকে মুখে নিয়ে দেখতে চাই ওটার স্বাদ কেমন ! ''মেয়েটির কাছ থেকে তার লুকোনো কথা বের করানোর জন্যে এই একটি মিথ্যে কথাই যথেষ্ট ! চট করে মেয়েটি অভ্র'র শার্টের কলার ঝাঁপটে ধরে বলে ...
-- কি বললে তুমি? তাহলে আমাকে দেয়া তোমার প্রতিজ্ঞার কি হবে?
--ওটা তোমার প্রেমিকের জন্যে তুলে রাখো ।
-- তাহলে তুমি আমার কে?
--সেটা তুমিই ভালো জানো!
''অবন্তী আর কথা না বাড়িয়ে অভ্র'র শার্টের কলার ছেড়ে দেয় । চোখ দুটো জলে ভরা টলমল করছে ! অবন্তীর অশ্রু সিক্ত নয়নের জল কাজল ধুয়ে গাল বেয়ে বেয়ে পড়ছে ... ওটা মুছে দেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই অভ্র'র । ছেলেটা শুধু মেয়েটির কাঁন্না দেখে যাচ্ছে আর মিটি মিটি হাসছে । মেয়েটি তার জেদ মেটাতে তার বোয়াল মাছের চোয়ালের মত হাতের নখ দিয়ে ছেলেটির বাম হাতে ইচ্ছে মতো কয়েকবার আচড় কাটে, খানিকটা রক্ত ও বেরুচ্ছিলো, তবুও অভ্র ওটাকে থামতে দিলোনা , সে হেসে যাচ্ছে অবিরত । দু'মিনিট পর অবন্তী অভ্র'র খুব নিকটে এসে কানে কানে ফিসফিস করে বলে ''আমাকে ভালবাসো? জবাবে অভ্র বলে বুকের বাম পাশটায় হৃদ যন্ত্রটায় ধক ধক করে শব্দ হচ্ছে শুনতে পাচ্ছেন মেডাম? ''কই না তো!'' অবন্তী মাথাটা আলতো করে অভ্র'র বুকে রাখে .. হৃদ যন্ত্রটায় ধক ধক করে শব্দ হচ্ছে । অবন্তী অবাক হয়ে প্রশ্ন করে ''ওটা কার জন্যে অমন করছে শুনি? ''অভ্র'' উত্তর দেয় কেউ না চললাম! মেয়েটি রেগে বলে ''এখানে চুপচাপ বসো কোত্থাও যাবেনা তুমি! আমি এবার রেগে গেলে কিন্তু খামচে তোমার হাত মুখ লাল করে ফেলবো! ছেলেটি ফিক করে হেসে দেয় । সাথে মেয়েটিও ছেলেটির বুকে মাথা গুজে দেয় , অভ্র চুপটি করে ছোট্ট বেঞ্চিটায় বসে রইলো! ভয়ে নয় পাগলী মেয়ের পাগলুমোর কাছে হার মেনেছে সে, অমন খুনসুটি ভালবাসা কজনের ভাগ্যেই বা জোটে? ॥
.
.
→ ✒ written by →শেষ সন্ধ্যার কবি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন